যুগযুগ ধরে প্রতিটি মহাদেশের মানুষ, আবহাওয়া এবং সংস্কৃতি সহজাত ভাবেই জ্ঞাত যে কোথাও রােগমুক্তির একটি শক্তির বাস রয়েছে যা কোনাে মানুষের শরীরের ক্ষমতা এবং কার্যক্রম ফিরিয়ে এনে স্বাভাবিক দক্ষতা এবং সুস্বাস্থ্য দিতে সক্ষম৷ তারা বিশ্বাস করে এই অদ্ভুত শক্তিটি বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে যাচনা করা যায় এবং যদি যথাযথ ভাবে এর জন্য প্রার্থনা করা যায় কিংবা আবাহন করা যায় তাহলে মানুষের দুঃখকষ্টের উপশম হবে৷
পৃথিবীর পূর্বকালীন সময়ে গােপনে মানুষের ভাল কিংবা মন্দ করার ক্ষমতা, তার মধ্যে অসুস্থ মানুষের রােগমুক্তিও রয়েছে, এ সবের অধিকারী ছিলেন ধর্মযাজক, যাজিকা এবং ধর্মপ্রাণ লােকজন৷ তারা দাবি করতেন এ সরাসরি পেয়েছে ঈশ্বরের কাছ থেকে তার মধ্যে অসুস্থ মানুষকে শক্তিও রয়েছে৷ রােগ নিরাময়ের এসব পদ্ধতি নানান জায়গায় নানান রকম ছিল, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেবতার উদ্দেশে প্রার্থনা এবং বলিদান করা হতাে৷
আরো পড়ুনঃ- স্বাস্থ্যের রহস্য | কোন কিছুই নিরাময় অসম্ভব নয়
নানান রকম অনুষ্ঠান করা হতাে, মন্ত্র পড়া হতাে, বোরহার করা হতাে অ্যাম্বুলেট ( মন্তপুত কবচ ) তালিসমান ( তাবিজ ) আংটি, দেহবিশেষ এবং ছবি৷ প্রাচীন মন্দিরে ধর্মগুরুরা তাদের রোগীদেরকে হিপনােটিক সাজেশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতেন৷ রােগীদেরকে বলা হতাে দেবতারা ঘুমের মধ্যে তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং তাদেরকে সুস্থ করে তুলবেন৷ হিকেটের ভক্তদেরকে রজন মাখানাে টিকটিকি, ফ্রাঙ্কিনসেনস ( গাছ থেকে পাওয়া রজন যা পােড়ালে সুগন্ধ বের হয় – অনুবাদক ) এবং গন্ধরস খােলা আকাশের নিচে বসে মেশাতে বলা হতাে৷
এই উদ্ভট এবং রহসময় অনুষ্ঠান শেষে তারা দেবীর কাছে প্রার্থনা করত এবং সদ্য তৈরি নির্যাস পান করে ঘুমিয়ে পড়ত৷ তাদের বিশ্বাস যথেষ্ট শক্তিশালী হলে তারা স্বপ্নে দেবীকে দেখতে পেত৷ এই ধর্মীয় অনুষ্ঠান আমাদের কাছে অদ্ভুত মনে হলেও এর সাহায্যে কিন্তু প্রায়ই রােগ নিরাময় হতাে৷ প্রাচীনকালের মানুষ অবচেতন মনের অবিশ্বাস্য শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে নানান পদ্ধতি অবলম্বন করত এবং রােগ নিরাময়ে তারা এ শক্তি ব্যবহার করত৷
তারা জানত এ পদ্ধতিতে কাজ হয় তবে বুঝতে পারতনা কীভাবে এবং কেন এ কাজ করে৷ এখন আমরা দেখতে পাই তারা অবচেতন মনকে জোরালাে সাজেশন দিত৷ ধর্মীয় এসব অনুষ্ঠান, নির্যাস, অ্যাম্বুলেট ইত্যাদি লােকের কল্পনাশক্তিতে শক্তিশালীভাবে আবেদন তৈরি করতে সক্ষম হতাে এবং রােগ উপশমকারীর দেয়া পরামর্শ মেনে নিত অবচেতন মন৷
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান যেখানে ব্যর্থ হয়েছে, রােগীরা যেখানে হাল ছেড়ে দিয়েছে সেখানে বেসরকারি রােগ নিরাময়কারীরা দারুণ সব ফল লাভ করেছে৷ এটি চিন্তার কারণে হয়েছে৷ বিশ্বজুড়ে এই রােগ উপশমকারীরা কীভাবে মানুষকে নিরাময় করে তােলে? এর জবাব হলাে এরকম রােগ নিরাময় ঘটছে কারণ অসুস্থ মানুষের অন্ধবিশ্বাস তার অবচেতন মনে বসবাস করা নিরাময় ক্ষমতাকে মুক্ত করে দেয়৷
নিরাময়কারী যত অদ্ভুত এবং বিচিত্র সব ওষুধ তৈরি করে রােগীদের মনে ততই এ বিশ্বাস বদ্ধমূল হতে থাকে যে এগুলাে রােগ নিরাময়ে আরও বেশি শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে৷ তাদের মানসিক অবস্থা স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব পরামর্শ সচেতন এবং অবচেতন মনে গ্রহণ সহজতর করে তােলে৷
আরো পড়ুনঃ- জীবনে ব্যার্থতার ৩০ টি কারণ
এখন মনকে বিশ্বাস করুন
১. নিজেকে বারবার মনে করিয়ে দিবেন আপনার রােগ নিরাময়ের ক্ষমতা রয়েছে আপনার অবচেতন মনের মধ্যেই৷
২. জানবেন বিশ্বাস হলাে জমিতে রােপণ করা বীজের মতাে৷ আইডিয়া নামের বীজটি আপনার মনে রােপণ করুন, প্রত্যাশার জল ঢেলে একে উর্বর করে তুলুন, এটি উৎপাদনক্ষম হয়ে উঠবে৷
৩. নিজের আইডিয়া, প্ল্যান অথবা আবিষ্কারের বাস্তবতায় বিশ্বাস করুন৷ তা করলে এটি উৎপাদনশীল হয়ে উঠবে৷
৪. অন্যদের জন্য প্রার্থনা করুন, জানবেন আপনার ভেতরকার সজীবতা, সৌন্দর্য এবং পারফেকশন অন্যদের অবচেতন মনের প্যাটার্ন বদলে দিয়ে চমৎকার ফলাফল নিয়ে আসবে৷
৫. বিভিন্ন মন্দিরে অলৌকিক রােগ নিরাময়ের যেসব ঘটনার কথা আপনি শুনতে পান তা আসলে কল্পনা এবং অন্ধবিশ্বাস যা অবচেতন মনের ওপর কাজ করে এবং রােগমুক্তির শক্তি রিলিজ করে৷ সকল রােগের উৎপত্তি মনে৷ মেন্টাল প্যাটার্ন এতে সাড়া না দেয়া পর্যন্ত শরীরে রােগ ফুটে ওঠে না৷
৬. আপনাকে সম্মােহন করে প্রায় যে কোনাে রােগের লক্ষণ আপনার ভেতরে উৎপন্ন করা যায়৷ এটি আপনার চিন্তা শক্তির প্রমাণ দেখায়৷
৭. রােগ নিরাময়ের একটিই মাত্র উপায় আছে আর তা হলাে বিশ্বাস৷ রােগমুক্তির একটিই মাত্র শক্তি রয়েছে আর তা হলাে আপনার অবচেতন মন৷
আরো পড়ুনঃ- যেকোনো বাজে অভ্যাস পাল্টানোর উপায়
৮. আপনার বিশ্বাসের বিষয়বস্তু সত্য হােক বা মিথ্যা, আপনি অবশ্যই ফল পাবেন৷
৯. আপনার অবচেতন মন আপনার চিন্তায় সারা দেবে৷ বিশ্বাসকে আপনার মনে চিন্তা হিসেবে স্থান দিন, সেটুকুই যথেষ্ট৷
শেষকথাঃ- তুমি যাহা আকাঙ্খা করো, প্রার্থনার সময় যদি তুমি বিশ্বাস করো যে তুমি উহা পাইবে, তবে অবশ্যই পাইবে৷
Thanks to comment Jibon Somossa official blog. Stay with us for more content. Follow us to Facebook. www.facebook.com/jibonsomossa.blog