একজন যুবতীর সৌন্দর্য শুধু ওর সুন্দর মুখেই লুকোন থাকে না, বরং ওর চলাফেরা, ওঠা - বসা এবং ঘােরা - ফেরা করার ভঙ্গীর ওপরও নির্ভর করে৷ ভাল চালচলন শুধুমাত্র স্বাস্হ্যের দৃষ্টিতেই নয়, সৌন্দর্যের দৃষ্টিতেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ! ঝুঁকিয়ে চললে পুরাে শরীর অক্সিজেন পাবেনা আর শরীরও দুর্বল হয়ে পড়বে৷ বেশ কিছু মেয়েদের কোমর বাঁকিয়ে চলার অভ্যাস আছে, এতে পেট আর চোখ ঠিকমত কাজ করতে পারেনা৷ ওদের হজম সংক্রাত বেশ কিছু রােগও হয়ে পড়ে৷
দাঁড়াবার সময়ঃ-
১ঃ- শরীরের সম্পূর্ণ ভার দুটো পায়ের ওপর হওয়া উচিত৷
২ঃ- নিতম্ব যেন এক দিকে ঝুকে না থাকে৷
৩ঃ- খুব টানটান বা ঝুকে পড়া কাঁধ ভাল দেখায় না৷ কাঁধ নিজের স্বাভাবিক অবস্থায় হওয়া উচিত৷
৪ঃ- হাত দুটোকে সােজা ঝুলিয়ে রাখুন৷ দাঁড়াবার সময় এই স্থিতিটা স্বাভাবিক দেখাবে৷
হাঁটার সময়ঃ-
১ঃ- পা সব সময় সামনের দিকে এগােন উচিত, ডান বা বাঁ দিকে নয়৷
২ঃ- হাঁটার সময় একটা কথা মাথায় রাখবেন যে, নিতম্ব আর হাত যেন না দোলে ! এটা দেখতে খুবই কুৎসিত লাগে৷
৩ঃ- দুমদুম করে পা ফেলে বা পা টেনে - টেনে চলাটা মেয়েদের শােভা পায় না৷ দুটো পায়ে শরীরের ওজন যেন সমানভাবে থাকে৷ যে মেয়েরা পায়ের পাতার ওপর ভার দিয়ে চলেন, ওদের পেট বাহিরের দিকে বেরিয়ে আসবে৷ যখন আপনি কারো সঙ্গে রাস্তা দিয়ে যাচেছন, তখন এটা সর্বদা মাথায় রাখবেন, উনি যেন আপনার চেয়ে আগে বা পেছনে না হয়ে পড়েন৷
আরো পড়ুনঃ- ওজন ও ভুঁড়ি কমানোর সহজ উপায়
বসার সময়ঃ-
১ঃ- মনে রাখবেন, আপনার কাপড়ের ইস্ত্রির ভাঁজ যেন নষ্ট না হয়৷
২ঃ- চেয়ার বা সােফায় ধীরে বসুন, প্রথমে নিজের পেছনের ভাগ ঠেকান, পরে শরীরের সম্পূর্ণ ভার দিন৷ চেয়ারে সােজা হয়ে বসা উচিত, অনেকক্ষন বসে ক্লান্ত হয়ে পড়লে একটু বিশ্রাম করে নিতে পারেন, নয়তাে সােজাই বসুন৷
ওঠার সময় ধীরে ধীরে উঠুন, এক ঝটকায় ওঠার চেষ্টা করলে পড়ে যেতে পারেন৷ আপনি নিজের দুটো পা কে জুড়ে চেয়ারের পায়ার ভেতরে করে নিন৷ এতে দুটো পা একে অপরের সঙ্গে ঠেকবে না৷ মাটিতে বসতে হলে শাড়ী সামলে বসুন৷ পা - কে এক দিকে মুড়ে বসুন৷ শাড়ী পরা থাকলে এরকম বসাটাই স্বাভাবিক এবং সুন্দরও বটে৷
স্যালোয়ার - কুর্তা পরে থাকলে, বিশেষ করে বাড়ীতে যে কোন ভবে বলা যেতে পারে৷ কারো সামনে পা ছড়িয়ে বসাটা উচিত নয়৷ অনেকক্ষন এক জায়গায় বসে কাত হয়ে পড়লে উঠে দাঁড়িয়ে কিছুটা পায়চারী করে নিন বা কিছুক্ষনের জন্য পা ছড়িয়ে আরাম করে নিন, তারপর আবার আগের মত পা গুটিয়ে নিন৷
কথা বলার সময়ঃ-
কথা বলার ঢং ব্যক্তিত্বের ওপর প্রচণ্ড প্রভাব ফেলে৷ যদি আপনি শিষ্টতার সঙ্গে মধুরভাবে কথা বলেন, তবে অন্যেরা খুব সহজেই আপনার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে উঠবে৷ কারও সঙ্গে কথা বলে ওর যােগ্যতা, স্বভাব এবং ব্যক্তিত্বের ব্যাপারে জানা যায়৷ কোন মহিলা হয়তাে দেখতে ততটা ভাল নন৷
কিন্তু উনি যদি কথাবার্তা বলার কলায় পারদর্শী হন, তবে উনি আপনার ওপর প্রভাব বিস্তার করবেনই৷ এতটা আস্তে কথা বলবেন না যে, তা অন্যে শুনতেই পাবেনা আবার এত চেঁচিয়ে বলবেন না যে, অন্যের কানে শ্রুতিকটু লাগে৷ কথা বলার সময় একটা ব্যাপার মাথায় রাখুন৷
আরো পড়ুনঃ- যেকোনো বাজে অভ্যাস পাল্টানোর উপায়
দুঃখের সময়ে জোরে - জোরে হেসে ওঠা এবং সুখের মুহূর্তে দুঃখের কথা বলা আপনার মূর্খতারই পরিচায়ক৷ যার সঙ্গে আপনি কথা বলছেন, তার সঙ্গে কি ধরনের কথাবার্তা বলা উচিত, সেটাও মাথায় রাখতে হবে৷ ছােট, বড় আর সমবয়সীদের সঙ্গে কথা বলার ঢং এক হবে না৷ ছােটদের সঙ্গে ওদের বয়সটা মাথায় রেখে কথা বলুন৷
বড়দের সামনে মাথা নীচু করে কথা বলা উচিত আর সমবয়সীদের সঙ্গে তাে যে কোন ধরনের ঠাট্টা - তামাশা করা যেতে পারে৷ মেয়েদের মধ্যে ফিসফিস করে কথা বলার একটা অভ্যাস থাকে৷ যখন পাঁচ জনের মধ্যে বসে আছেন, তখন কানে - কানে কথা বলাটা অত্যন্ত ভুল৷ যদি আপনার কোন গােপনীয় কথা থেকে থাকে, তাহলে সবার থেকে দূরে সরে গিয়ে কথাটা বলতে পারেন৷
এতে অন্যেরাও অপমানিত বােধ করবে না৷ সর্বদা নিজেই কথা বলে যাবার চেষ্টা না করে অন্যের কথাও শুনুন৷ প্রথমবার কারাে সঙ্গে দেখা হলে সাধারণ বিষয় নিয়ে আলােচনা করুন৷ তারপর ওনার পরিচয় প্রাপ্ত করুন৷ প্রথম আলাপেই কারাে কাছ থেকে সব কিছু জেনে নেবার চেষ্টা করাটা ঠিক নয়৷
কথা বলার সময় হাত মটকানাে, ভ্ৰ নাচানাে , মাথা ঘােরানো আপনার ব্যক্তিত্বকে আরও কুৎসিত করে তুলবে৷ যদি কেউ আপনার থেকে কোন পরামর্শ চায়, তবে ওর পুরাে কথা শুনে পরামর্শ দেওয়া উচিত৷ আত্মবিশ্বাস অনেক বড় জিনিষ৷
এটা মানুষের ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তােলে৷ কারও সঙ্গে কথা বলার সময় সংকোচ অনুভব করবেন না৷ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলুন৷ কিন্তু এটাও দেখবেন, আপনার আত্মবিশ্বাস অন্যের ওপর এতটা প্রভাব বিস্তার না করুক যে, ও কথা বলতে সংকোচ অনুভব করে৷ আপনার কথাবার্তা এতটা মধুর হওয়া উচিত যে, অন্যের ওপর তার স্বায়ী প্রভাব পড়ে৷
আচরণঃ-
অন্যের প্রতি আমাদের ব্যবহারকে আচরণ বলা হয়৷ আপনার নিজের পরিবারের লােকেদের সঙ্গে, প্রতিবেশী, সহকর্মী, আত্মীয় - সবার প্রতি নিজের ব্যবহার ভাল রাখা উচিত৷ মেয়েদের বিয়ের পর নতুন সংসারে যেতে হয়৷ তাঁহ ওদের মধ্যে শুরু থেকেই ব্যবহার কুশলতা ঢুকিয়ে দেওয়াটা অত্যন্ত জরুরী৷
আরো পড়ুনঃ- কিভাবে আত্নবিশ্বাস বাড়ানো যায়
আপনি অন্যকে নিজের ব্যবহার দ্বারা প্রসন করলে ওরাও আপনার সুখ - দুঃখের ভাগীদার হয়ে উঠবে৷ বয়সে ছােট, বড় এবং নিজের সমবয়সীদের সঙ্গে শিষ্ট এবং মধুর ব্যবহার আপনাকে জনপ্রিয় করে তুলবে৷ পরিচিত এবং আত্মীয়দের সুখ - দুঃখের অংশীদার হােন৷ যদি কেউ আপনাকে কোন ব্যাপারে সাহায্য করে থাকে, তবে তার প্রশংসা করুন৷
যদি আপনি কোন ভুল করে থাকেন, তবে সেটা স্বীকার করাটা আপনারই মহানতার পরিচায়ক! সর্বদা অন্যের সমালােচনা না করে ওদের গুনেরও প্রশংসা করতে শিখুন৷ কেউ যদি গরীব হয়, তাকে হেয় করার চেস্টা করবেন না৷ ব্যবহার কুশলতা এমন এক গুণ, যাকে একবার গ্রহণ করলে, সেটা সারা জীবনেও আপনার সঙ্গ ছাড়বে না৷
পােশাক কিভাবে পরবেন?
সঠিক ভাবে পরা সস্তা এবং সাধারণ পােশাকও আপনার সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলবে৷ সেজন্য দামী - দামী পােশাক না কিনে পােশাক সঠিকভাবে পরতে শিখুন৷
কম উচচতাঃ-
যদি আপনার উচ্চতা কম হয়, তাহলে ছােট ছােট প্রিন্টের কাপড় পরুন৷ মােটা প্রিন্টে আপনার উচ্চতা আরও কম দেখাবে৷ কখনাে আড়াআড়ি স্ট্রাইপের কাপড় পরবেন না৷ লম্বা স্ট্রাইপের আপনাকে কিছুটা লম্বা দেখাবে৷ গােলাপী শাড়ীর সঙ্গে ব্লাউজ গােলাপী রংয়ের পরুন৷ এতে আপনার উচ্চতা কম দেখাবে না৷ উঁচু হিলের জুতােও আপনার উচ্চতার সমস্যা কিছুটা সমাধান করবে৷ শাড়ী পড়লে সরু পাড়ের শাড়ী পরুন৷
লম্বা উচ্চতাঃ-
যদি আপনি খুব লম্বা হন, তাহলে সর্বদা বড় প্রিন্টের এবং চওড়া পাড়ের শাড়ী পরুন৷ আড়াআড়ি ট্রাইপের শাড়ীতে আপনার উচ্চতা কিছুটা কম দেখাবে৷
মােটা শরীরঃ-
মোটা মহিলাৱা ভুলেও পাতলা কাপড় পারবেন না৷ এতে আপনাকে আরও বেশী মোটা দেখাবে৷ আপনার হালকা রং এর কাপড় পরা উচিত৷ মােটা মহিলারা নিজেদের জন্য ছোট প্রিন্ট আর সরু পাড়ের শাড়ী বেছে নিন৷
আরো পড়ুনঃ- বেঁচে থাকার জন্য টাকার মূল্য কতটা
কাপড়ের রংঃ-
কাপড়ের রং আপনার মুখের ওপর অনেকটা প্রভাব ফেলে৷ কোন রংয়ে আপনার মুখ উজ্জ্বল দেখায়, আবার কোন রং - য়ে উদাস৷ শীতকালে লাল, হলুদ, কালাে, সবুজ রং ভাল লাগে, আবার গরমে গােলাপী, সাদা, সবুজ, নীল রং চোখকে শান্তি দেয়৷ বর্ষায় হলুদ, আকাশী রং ভাল লাগে৷ দিনের বেলা হাল্কা আর সন্ধ্যায় বা রাতে গাঢ় রং ভাল লাগে৷
শুভ মুহশুর্তে চকমকে রংয়ের পােশাক পরুন আর দুঃখের মুহূর্তে হাল্কা রং - য়ের৷ যদি পারেন তাে শীত - গ্রীষ্ম এবং বর্ষার জন্য তিন সেট আলাদা আলাদা পােশাক রাখুন৷ একটা ঋতু চলে গেলে সেই ঋতুর পােশাক আলমারীতে গুছিয়ে রেখে নিন৷ এইভাবে একই ধরনের পােশাক না পরায় আপনার মনও ভাল থাকবে৷ শীতের জন্য গরম, গরমের জন্য সুতী আর বর্ষাকালে টেরিলিন কাপড় পরলে সুবিধা হয়৷
আয়ুঃ-
আয়ু অনুযায়ী পােশাক নির্বাচন করা উচিত৷ এতে ব্যক্তিত্ব বাড়ে৷ কিশাের আর যুবকদের পোশাক প্রৌঢ় আর বৃদ্ধদের পোশাকের চেয়ে অন্য রকম হয়৷ বয়স বেড়ে গেলে চকমকে প্রিন্টের পােশাক আর দেখতে ভাল লাগেনা৷ এতে আপনাকে ছেলেমানুষ বলে মনে হবে৷
সাবধানতাঃ-
১ঃ- এমন পােশাক পরুন, যা আপনাকে মানায়৷ ফ্যাশনের অন্ধ অনুকরণ করাটা উচিত নয়৷
২ঃ- পােশাক কম তৈরী করান, কিন্তু সেগুলাে যেন ভাল হয়৷ কাপড়ের সেলাই ভাল হলে সস্তা পােশাকেও আপনি আকর্ষক হয়ে উঠবেন৷
আরো পড়ুনঃ- Sence Of Humour বাড়ানোর উপায়
৩ঃ- পােশাক পরার আগে পােশাকের ইস্ত্রি ইত্যাদি দেখে নিন৷ সুতী পােশাক বিনা মাড়ে পরা উচিত নয়৷
৪ঃ- বড় গলার পােশাক পরলে আপনি গ্লামার গার্ল তাে হয়ে পড়বেন, কিন্তু গরিমাময়ী হবেন না৷ সর্বদা এমন পােশাক পরুন, যাতে আপনাকে শিষ্ট এবং সভ্য দেখায়৷
৫ঃ- নতুন ফ্যাশনের পােশাক করান, কিন্তু সেটা নিজের শরীর দেখে৷ যদি হাই ব্যাক ( উচু গলা ) -এর ব্লাউজে আপনাকে ভাল মানায়, তাহলে ফ্যাশন আনুযায়ী বানিয়ে নিন৷
Thanks to comment Jibon Somossa official blog. Stay with us for more content. Follow us to Facebook. www.facebook.com/jibonsomossa.blog