অবসাদ অনেক ক্ষেত্রেই দুশ্চিন্তা আনে - অন্ততঃ দুশ্চিন্তা প্রবন করে তুলতে পারে৷ যে কোন ডাক্তারি ছাত্রই বলবে অবসাদ যে কোন রকম রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় - আবার যে কোন মনস্তাত্বিকও বলবেন অবসাদ ভয় আর দুশ্চিন্তার আবেগ দূর করার ক্ষমতাও কমিয়ে আনে৷ তাই অবসাদ দূর করতে পারলে দুশ্চিন্তা দূর করা সম্ভব হতে পারে৷ অবসাদ আর দুশ্চিন্তা কাটানাের ক্ষেত্রে নিয়ম হলঃ “ঘন ঘন বিশ্রাম নিন৷ ক্লান্ত হওয়ার আগেই বিশ্রাম করুন৷
আরো পড়ুনঃ- কী করে মানুষ পাগল হয়
এটা এত জরুরি কেন? কারণ অবসাদ অত্যন্ত দ্রুত ছড়ায়৷ আপনি বিশ্রাম করতে থাকলে কিছুতেই দুশ্চিন্তা করতে পারবেন না৷ বিশ্রামের সময় স্নায়বিক বা আবেগজনিত অবস্থা মােটেই থাকতে পারে না৷ আপনার হৃদপিণ্ড প্রতিদিন যে পরিমান রক্ত পাম্প করে তাই দিয়ে একটা রেলের গাড়ি বােঝাই করা যায়৷ এর ফলে যে শক্তির উৎপাদন হয় তা দিয়ে পাঁচশ চল্লিশ মন কয়লা তিন ফুট উচু করে জমা করা চলে৷ এরকম কাজ সে পঞ্চাশ, সত্তর বা নব্বই বছর ধরে করে চলতে পারে৷
হৃদপিণ্ড কিভাবে তা সহ্য করে হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের ডঃ ওয়াল্টার বি . ক্যানন বলেনঃ “বেশির ভাগ লােকেরই ধারনা হৃদপিণ্ড সারাক্ষনই কাজ করে চলে৷ আসলে প্রতিবার সংকোচনের সময় বিশ্রাম ঘটে৷ মিনিটে মাত্র সত্তর বার বুক ধুক পুক করে আর হৃদপিণ্ড চব্বিশ ঘণ্টায় পনেরো ঘণ্টা বিশ্রাম নেয়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় উইনস্টন চার্চিল সত্তর বছর বয়সে রােজ প্রায় ষােল ঘণ্টা কাজ করতে পারতেন, বছরের পর বছর ধরে সারা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে তিনি যুদ্ধ পরিচালনা করেতেন৷ এ এক অবিস্মরণীয় ব্যাপার৷
এর গােপন রহস্য কি? তিনি রােজ সকালে এগারােটা পর্যন্ত বিছানায় বসে কাজ করতেন, রিপাের্ট পড়তেন, আদেশ দিতেন, টেলিফোন করতেন আর জরুরি সভাও করতেন৷ মধ্যাহ্ন ভােজের পর তিনি একঘণ্টা ঘুমােতেন৷ সন্ধ্যাবেলাতেও তিনি দু ঘন্টা ঘুমােতেন আটটায় ডিনার খেয়ে৷ তাঁকে অবসাদ দূর করতে হত না৷ তিনি অবসাদ আসতেই দিতেন না৷ যেহেতু তিনি অনবরত বিশ্রাম নিতেন, তাই ক্লান্ত না হয়ে কাজ করতেও পারতেন৷ আপনার ক্ষেত্রে এটা কি রকম হতে পারে?
আপনার পক্ষে যদি দুপুরে ঘুমনাে সম্ভব না হয় তাহলে সন্ধ্যায় খাওয়ার আগে তা করতে পারেন৷ দুপুরে খাওয়ার পর কিছু সময় ঘুমালে ক্লান্তি কেটে যায়৷ শহুরে মানুষদের এটাই করা উচিত৷ জেনারেল জর্জ মার্শাল তাই করতেন৷ সেনাবাহিনী পরিচালনার ফাঁকে তিনি দুপুরে ঘুমিয়ে নিতেন৷ রাত্রে আট ঘণ্টা ঘুমিয়ে যে বিশ্রাম মেলে তার চেয়ে বিশ্রাম পাওয়া যায় খাওয়ার আগে একঘণ্টা আর রাত্রে ছ'ঘণ্টা ঘুমােলে৷ একজন শারীরিক পরিশ্রমকারী অনেক বেশি কাজ করতে পারে সে যদি কাজের ফাঁকে কিছু বিশ্রাম নেয়৷
আরো পড়ুনঃ- দুশ্চিন্তার ক্ষতিকর প্রভাব সমূহ
বেথলেহেম ইস্পাত কোম্পানির ফ্রেডরিক টেলার ব্যাপারটা প্রমান করে দেখান৷ তিনি দেখেন মজুররা রােজ ১২ টন লােহা বােঝাই করতে পারে৷ অথচ তারাই আবার পারে ৪৭ টন বােঝাই করতে যদি উপযুক্ত বিশ্রাম পায়৷ টেলর বিশেষ একজন মজুরকে বেছে নিয়ে স্টপ ওয়াচ দিয়ে পরীক্ষা চালান৷ ঐ লােকটিকে লােহা তােলার ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম করতে দেওয়া হয়৷ তাতে দেখা যায় যে ১২ টনের জায়গায় ৪৭ টন তুলতে পেরেছে৷ তাই আবার বলিঃ সেনাবাহিনী যা করে আপনিও তাই করুন৷ প্রায়ই বিশ্রাম নিন৷ আপনার হৃদপিণ্ডের মত পরিশ্রান্ত৷
Thanks to comment Jibon Somossa official blog. Stay with us for more content. Follow us to Facebook. www.facebook.com/jibonsomossa.blog