hh

কিভাবে ভাল রেজাল্টের জন্য পড়াশুনা করতে হবে

কিভাবে ভাল রেজাল্টের জন্য পড়াশুনা করতে হবে

নানা ঐতিহাসিক কারণে আমাদের কলেজগুলাে ডিগ্রি দেয় কিন্তু ব্যক্তিগত জ্ঞান আহরণের দিকে নজর দেয় না৷ লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ে ফেল করলে সরকারের কিছু যায় আসে না৷ দু একজন ছাড়া অধ্যাপকরাও এ নিয়ে কিছু ভাবেন না৷ অনেক সময় ফেলের জন্য পরীক্ষককে দোষ দেওয়া হয়৷ 

সাবজেকটিভ ভাবে খাতা দেখার পদ্ধতি যতদিন থাকবে তখন একজন পরীক্ষার্থীর নম্বরের তারতম্য নির্ভর করবে কার কাছে খাতা গেছে তার ওপর৷ প্রত্যেকের মূল্যায়নের মান আলাদা৷ তুমি যদি কোন অধ্যাপকের কাছে ৬৫% পাও তাহলে ধরে নেবে তিনি না দেখে আর একজন ওই খাতা দেখলে তুমি ৫৫ পেতে পারতে অথবা ৭০ পেতে পারতে৷ 

কিন্তু যে সব ছাত্র সঠিক উত্তর লেখেনি অথবা আদপে লেখেনি অথবা যার ভাষা অশুদ্ধ, প্রচুর বানান ভুল, অপরিষ্কার হাতের লেখা, পরীক্ষক তাকে নম্বর দেবেন কোথা থেকে? সমস্ত কিছু মিলিয়ে পরীক্ষা একটা জুয়াে খেলা৷ এই সিস্টেমের মধ্যে প্রচণ্ড মেধাশক্তি, ব্যক্তিত্ব ও আত্মবিশ্বাসের জোরে যারা স্ট্যান্ড করে, ধরে নিতে হবে তারা রত্ন৷ 

কিন্তু সাধারণ মেধার ছেলেমেয়েরা, যারা পাশ ও ফেলের প্রান্তসীমায় বাস করে অথবা প্রথম বিভাগ ও দ্বিতীয় বিভাগের মধ্যে এমন একটা নম্বর পায় সেটা তাদের ভাগ্য বিড়ম্বনা ছাড়া কিছুই নয়৷ কিন্তু এই পরিস্থিতিকে মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই৷ আমাদের চেষ্টা করতে হবে 

১. পরীক্ষা দেবার আর্ট সঠিক ভাবে রপ্ত করে অনেক ছাত্রছাত্রীই নম্বর বাড়াতে পারে৷ তার জন্য দীর্ঘ প্রস্তুতি চাই৷ পরীক্ষার ঠিক মাসখানেক আগে হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে ওঠা নয়৷ ভর্তির প্রথম দিন থেকে নিয়মিত পড়াশোনা করে প্রস্তুতি এগিয়ে রাখা

২. পরীক্ষা সিস্টেমকে ভয় না পাওয়া৷ এজন্য রিহার্সাল দিতে হবে৷ অনেক কলেজে উইকলি টেস্ট হয়, হাফইয়ারলি টেস্ট হয়৷ এই সব পরীক্ষাকে অনেকে সিরিয়াসলি নেয় না৷ কিন্তু এই পরীক্ষায় বসে তুমি বুঝতে পারবে একটা প্রশ্ন লিখতে কত সময় লাগছে৷ কী রকম নম্বর পাচ্ছ৷ 

আরো পড়ুনঃ- কিভাবে পড়াশোনায় মন বসাবেন

কিছুদিন আগে একটি মেয়ে আমার কাছে কাউন্সেলিং - এর জন্য বসেছিল৷ সে পার্ট ওয়ানে দুবার ফেল করেছে৷ অথচ মেয়েটি খুব বুদ্ধিমতী এবং চটপটে৷ আমি তার সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারলাম তার লেখার টেকনিকে কোথাও গণ্ডগােল থেকে যাচ্ছে৷ আমি তাকে বললাম, তুমি কয়েকটি উত্তর লিখে অমুক অধ্যাপিকাকে দেখাও৷ তিনি হেড এগজামিনার৷ তিনি বলতে পারবেন এরকম লিখলে তুমি কত নম্বর পেতে পারবে৷ 


পরীক্ষার টেনসন থেকে মুক্তি পেতে গেলে পরীক্ষাকে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করতে হবে৷ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে যতক্ষণ না পরীক্ষা দেবে ফল কিছুতে ভাল হবে না৷ পরীক্ষার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত অনেকে বই পড়ে৷ এটি আত্মবিশ্বাসের অভাব৷ এই শেষ মুহূর্তে পড়লে আরও বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা৷ সারা বছর মনকে প্রফুন্ন রাখতে হবে৷ 

এজন্য পড়াশােনার মত আড্ডা দেওয়া, হই হই করা, হবি তৈরি করা সমান জরুরি৷ বেশি রাত না জেগে বারােটার আগেই ঘুমিয়ে পড়তে হবে এবং দেখতে হবে ঘুমটা ঠিক হচ্ছে কিনা৷ একঘেয়েমি কাটাবার জন্য মাঝে মাঝে পড়ার জায়গা বদল করতে হবে৷ পড়ার ঘরে যদি যথেষ্ট আলোবাতাস না থাকে তাহলে ছাদে অথবা পার্কে গাছের নিচে বসেও মাঝে মারা পড়া ভাল৷ চোখের যত্ন নিতে হবে৷ 

কোন কারণে চোখ লাল হলে বা ঝাপসা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখাতে হবে৷ প্রতিদিন রাতে শুতে যাবার আগে চোখে ঠাণ্ডা জলের ঝাপটা দেওয়া দরকার৷ কলেজ থেকে ফিরেও তাই করবে৷ ভাল নম্বর পেতে গেলে ভাল হাতের লেখা অনেকটা সাহায্য করে৷ কিন্তু হাতের লেখা ভাল করা যায় না৷ তবে স্পষ্ট করা যায়৷ 

আরো পড়ুনঃ- মানুষ আত্মহত্যা কেন করে | বাঁচার জন্য আত্মহত্যা

লেখার সময় মার্জিন দিয়ে ডবল স্পেসে লিখতে হয়৷ যাদের হাতের লেখা খুব জড়ানাে তাদের গােটা গােটা করে লেখার অভ্যাস করতে হবে৷ যাতে প্রতিটি বর্ণ পড়া যায়৷ ভুল বানান পরীক্ষকের কাছে পরীক্ষার্থীর ভাবমূর্তি একদম নষ্ট করে দেয়৷ উত্তর ভাল লেখা হলেও ভুল বানান ও অশুদ্ধ ভাষার জন্য অনেক নম্বর কমে যেতে পারে৷ 

কিন্তু সে তাে গেল পরের কথা৷ তার আগে উত্তরগুলােতে টু দি পয়েন্ট এবং ঠিক ঠাক লিখতে হবে৷ অনেক প্রশ্ন আছে যেগুলাে পয়েন্ট বাই পয়েন্ট লেখা ভাল৷ এতে উত্তর ছড়িয়ে যায় না অথচ সব পয়েন্ট কভার হয়ে যায়৷ প্রতিটি উত্তরই একটি ছােট্ট যুৎসই ভূমিকা দিয়ে শুরু করতে হবে৷ শেষও করতে হবে যুক্তিসম্মত সিদ্ধান্ত দিয়ে৷ 

( logical conclusion ) | তুমি এতক্ষণ ধরে যা লিখলে উপসংহার যেন তারই শেষ অংশ হয়৷ তবে যাই লেখাে না কেন, পরীক্ষার হলে বসে বসে যদি উত্তর, তৈরি করাে তাহলে ভাবতে ভাবতেই সময় চলে যাবে৷ পুরাে সাবজেক্ট সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকলে এটা হবেই৷ তাই বলতে চাই, টেক্সট বই রিডিং দিয়ে নাও এবং মােদ্দা বিষয়গুলি মনে রাখাে৷ 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad