বেদে সূর্যের মহিমা যে ভাবে বর্ণিত হয়েছে, তা খুবই যথাযথ৷ আমাদের ব্রহ্মাণ্ডের অস্তিত্ব বজায় আছে সূর্যের জন্যই৷ সব প্রাণীই সূর্য থেকে প্রাণশক্তি আহরণ করে৷ এই শক্তি প্রচুর ও অনন্ত, তাই এটি সর্বোচ্চ মাত্রায় ব্যবহার করা উচিত৷
সূর্যের আলাে দেখতে সাদা, কিন্তু এতে সাতটি রং আছে বেগুনি, গাঢ় নীল, নীল, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল৷ এর মধ্যে প্রথম তিনটি দেহে শীতল প্রভাব ফেলে এবং এরা অ্যান্টি-সেপ্টিকও বটে৷ শেষ তিনিটি রং তাপ সৃষ্টি করে৷ সবুজ হল নিরপেক্ষ৷
যুক্তরাষ্ট্রের ডা. এডইন ব্যাবিট, এম.ডি., প্রয়ােগের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে সব ধরণের দীর্ঘস্থায়ী ও ভয়াবহ রােগে রং চিকিৎসা দ্বারা খুব উপকার হয়৷
আরো পড়ুনঃ- স্বাস্থ্যের রহস্য | কোনকিছুরই নিরাময় অসম্ভব নয়
বিভিন্ন রােগে বিভিন্ন রঙের প্রভাব:
বেগুনিঃ- হাড় ও মজ্জা, টিউমার, টাক পড়া, চোখে ছানি ও অন্ধত্ব৷
গাঢ় নীলঃ- চোখ-নাক-গলার সমস্যা, মুখে পক্ষাঘাত, ফুসফুসের রােগ, হাঁপানি, ক্ষয়রােগ, হজম শক্তি হ্রাস, স্নায়ু প্রণালীর সমস্যা, খিঁচুনি, মস্তিষ্ক
বিকৃতি৷
নীলঃ- হুপিং কাশি, দেহে অত্যাধিক তাপজনিত সব রকমের রােগ, গলার
অসুখ, জ্বর, টাইফয়েড, বসন্ত, হাম, মুখে ঘা, কলেরা, মস্তিষ্কে ফোলা, স্নায়ুরােগ, অনিদ্রা, মানসিক অবসাদ, বীর্যপাতের সমস্যা, পােড়া, নাক থেকে রক্তপাত ইত্যাদি৷ ডা. এডউইন ব্যাবিট নীল রঙকে বিশ্বের শ্রেষ্ট অ্যান্টিসেপ্টিক বলে মনে করেন এবং বলেন যে সেইজন্যই দিনের বেলা মেঘহীন নীল আকাশ বিশ্বের উপর দারুণ উপকারী প্রভাব ফেলে থাকে৷
সবুজঃ- হৃদযন্ত্রের সমস্যা, নিম্ন ও উচ্চ রক্তচাপ, ত্বকের সমস্যা, ক্যান্সার,
ইনফ্লুয়েঞ্জা, সিফিলিস, চোখে ব্যথা ইত্যাদি৷
হলুদঃ- হজমের সবরকম সমস্যা, প্লীহা, যকৃতের অসুখ, ডায়াবেটিস, কুষ্ঠরােগ ইত্যাদি৷
আরো পড়ুনঃ- আপনার স্বাস্থ্য আপনার হাতের মুঠোয়
কমলাঃ- দীর্ঘস্থায়ী হাঁপানি, বঙ্কাইটিস, শ্বাসনলিতে ফোলা, গেঁটেবাত, ফোলা,
বৃক্ক, মানসিক উৎকণ্ঠা, মৃগি ইত্যাদি৷
লালঃ- রক্তাল্পতা, দুর্বলতা, নিষ্ক্রিয়ভাব, সর্দি, পক্ষাঘাত, সাদা দাগ, বাত, ক্ষয়রােগ ইত্যাদি৷
রশ্মি গ্রহণের উপায়: সূর্যোদয়ের ৯০ মিনিট পর ও সূর্যাস্তের ৬০ মিনিট আগে প্রয়ােজনীয় রঙের একটি কাচ এমনভাবে সূর্যালােকে রাখতে হবে যাতে দেহের আক্রান্ত অংশে রশ্মি এসে পড়ে৷ এই সূর্যালােক গ্রহণের সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে রােগী সরাসরি জোরালাে হাওয়ার সামনে না পড়েন৷ যদি তা সম্ভব না হয়, ৬০ থেকে ১০০ ওয়াটের একটি রঙিন বাল্ব নিন৷ রঙিন বা না পেলে, সাধারণ বাল্বে রঙিন জিলেটিন কাগজ চার ভাঁজ করে জড়িয়ে নিন৷ বাল্বটি জ্বেলে দেহের আক্রান্ত অংশ ১৮ থেকে ২০ ইঞ্চি দূরে রেখে, দিনে দু’বার ৫ থেকে ১০ মিনিট এই আলাে গ্রহণ করুন৷
জলের মাধ্যমে রং গ্রহণ করা:
চাহিদামতাে রঙের কাচের বােতল নিন৷ তা না পেলে সাদা কাচের বােতলে চাহিদামতাে রঙের জিলেটিন কাগজ জড়িয়ে নিন৷ এতে ৩/৪ ভাগ জল ভরে একটি কাঠের তক্তার উপর রাখুন৷ এটিকে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ৩টের মধ্যে অন্তত ৩ ঘন্টা সময় ধরে সূর্যালােকে রাখুন৷
আরো পড়ুনঃ- প্রাচীন সময়ের রোগ নিরাময় পদ্ধতি
যদি বােতলটি সূর্যালােকে ৩ ঘন্টার বেশিও রাখা হয়, তাহলেও কোনও ক্ষতি হবে না৷ শুধু দেখবেন যাতে এই রং-যুক্ত জল যেন অন্য কোনও রঙের প্রভাবে না আসে৷ এই রং-যুক্ত ওষুধের জল ১/১ গ্লাস করে রােগীকে রােগের তীব্রতা অনুসারে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের ব্যবধানে খাওয়াতে হবে৷ যদি অন্য কোনও রং-যুক্ত জল দেওয়ার দরকার হয়, তা হলে তাও পালা করে দেওয়া যেতে পারে৷ এটি একটি প্রাকৃতিক চিকিৎসা, যা কার্যকররূপে অ্যাকিউপ্রেশারের সঙ্গে ব্যবহার করা যেতে পারে৷ অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসক এই উপচারটি অধ্যয়ন করে এটি সযত্নে ব্যবহার করতে পারেন৷
Thanks to comment Jibon Somossa official blog. Stay with us for more content. Follow us to Facebook. www.facebook.com/jibonsomossa.blog