এই দর্শনের যে কোনাে অংশ সফলভাবে ব্যবহার করার আগে এটি রিসিভ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে৷ তবে এ প্রস্তুতি কঠিন কিছু নয়৷ এটি শুরু হবে আপনার তিনটি প্রধান শত্রুকে বুঝতে পারা, তাদেরকে নিয়ে বিশ্লেষণের মাধ্যমে এবং এদেরকে ধ্বংস করতে হবে৷ এই তিন শত্রুর নাম সিদ্ধান্তহীনতা, সন্দেহ ও ভয়৷ এই তিনটি নেতিবাচক ধারণার একটিও যদি আপনার মনে আসন গেড়ে বসে থাকে তাহলে কাজ করবে না ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়৷
এই অশুভ ত্রয়ী পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত, যেখানে একজনের দেখা মিললে অপরজন কাছাকাছি থাকবেই৷ সিদ্ধান্তহীনতা হলাে ভয়ের চারা৷ পড়ার সময় এ কথাটি খরণে রাখবেন, সিদ্ধান্তহীনতা থেকে উৎপত্তি সন্দেহের, এবং দুইয়ের মিশ্র সৃষ্টি হয় ভয়৷ তবে এ মিশ্রণ প্রক্রিয়াটি প্রায়ই মন্থরগতির হয়ে থাকে৷ কারণেই এই তিন শত্রু এত বিপজ্জনক৷ তারা অঙ্কুরিত হয় এবং নিজেদের জানান না দিয়েই বড় হতে থাকে৷
আরো পড়ুনঃ- অবচেতন মনের সাহায্যে ভয় দূর করবেন যেভাবে
ছয়টি মূল ভয়
বেসিক বা মূল ভয়ের সংখ্যা ৬৷ এগুলাের কোনাে না কোনাে একটির দ্বারা মানুষকে দুর্ভোগ পােহাতে হয়৷ তবে পুরাে ছয়টি ভয় যদি একজন মানুষকে গ্রাস করতে না পারে তাহলে তাকে সৌভাগ্যবান বলতেই হবে৷ যে ছয়টি ভয় সবচেয়ে কমন সেগুলাে হলাে৷
দারিদ্রের ভয়
সমালােচনার ভয়
রুগ্ন স্বাস্থ্যের ভয়
প্রিয়জনের ভালােবাসা হারানাের ভয়
বুড়াে হয়ে যাওয়ার ভয়
মৃত্যু ভয়
আরাে কিছু ভয় আছে তবে সেগুলােকে খুব বেশি প্রাধান্য না দিলেও চলে৷ এই ছয়টি ভয়ের মধ্যেই সেগুলাে এসে যায়৷ এই ভয়গুলাের ব্যাপকতা পৃথিবীর জন্য একটি অভিশাপ, এগুলাে চলে একটি বৃত্ত ঘিরে৷ প্রায় ছয় বছর ধরে আমরা যে মহামন্দ মধ্যে ছিলাম ( ১৯৩০ এর অর্থনৈতিক বিপর্যয় ) সেটি ছিল দারিদ্রের ভয়৷ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরের বছর আমাদেরকে রুগ্ন স্বাস্থ্যের ভয় তাড়িয়ে ফিরেছে৷ ওই সময় বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল মহামারী৷ ভয় আসলে একটি মানসিক অবস্থা ছাড়া কিছু নয়৷ এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে৷ চিকিৎসকরা সাধারণ মানুষের চেয়ে কম রােগাক্রান্ত হন৷ এর কারণ তারা অসুখে ভয় পান না৷ তিনি কোনােরকম ভয় ছাড়াই প্রতিদিন সংক্রামক রােগে আক্রান্ত শত শত রােগীর সংস্পর্শে আসেন৷ এদের মধ্যে সুলি পক্সের রােগীও আছে প্রচুর৷ কিন্তু তিনি নিজে আক্রান্ত হন না৷ এর কারণ তিনি এসব রােগ নিয়ে ভীত নন৷
দারিদ্রের ভয়
দারিদ্র এবং ঐশ্বর্যের মধ্যে কোনাে কম্প্রেমাইজ চলবে না৷ দুটি দুই ভিন্ন রাস্তায় চলে৷ আপনি ধনী হতে চাইলে দারিদ্রের যে কোনাে বিষয় অবশ্যই এড়িয়ে যেতে হবে৷ আর ধনী হওয়ার জন্য চাই মনের মধ্যে আকাক্সক্ষা৷ ভয়কে কীভাবে জয় করবেন এবং আকাঙ্ক্ষার বাস্তবসম্মত ব্যবহারে মনকে প্রস্তুত করার নির্দেশাবলী৷ আপনি এ দর্শনটি কতটুকু হজম করতে পারবেন তার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছুই৷
আরো পড়ুনঃ- পানিতে নামার ভয় দূর করার উপায়
এখানেই আপনি নিজের সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করার সুযােগ পেয়ে যাচ্ছেন যে ভবিষ্যতে আপনার জন্য আসলে কী রেখে দিচ্ছেন৷ এ অধ্যায়টি পাঠ শেষে আপনি যদি দারিদ্রকে গ্রহণ করতে চান তাহলে আপনার মনকে প্রস্তুত করুন দারিদ্রকে রিসিভ করার জন্য৷ এ সিদ্ধান্ত আপনি এড়িয়ে যেতে পারবেন না৷ আপনি যদি ঐশ্বর্যশালী হতে চান তাহলে সিদ্ধান্ত নিন ঠিক কত টাকা পেলে সন্তুষ্ট হবেন৷ আপনি ধনী হওয়ার রাস্তাটি চেনেন, আপনাকে ওই রাস্তার একখানা ম্যাপ দেওয়া হয়েছে যা অনুসরন রাস্তাতে চলতে থাকবেন৷
শুরুটা করতে যদি গড়িমসি করেন কিংবা পৌছাবার আগেই ধমে যান তাহলে এজন্য সম্পূর্ণভাবে আপনি একা দায়ী থাকবেন৷ এর দায় দায়িত্ব আপনার৷ দারিদ্রের ভয় একটা মানসিক অবস্থা ছাড়া কিছু নয় তা একটু আগেও বলা হয়েছে৷ তবে এটি যে কোনাে মানুষের অর্জনকে ম্লান করে দিতে পারে এবং এ সত্যটি বেদনাদায়কভাবে পরিস্ফুটিত হয়েছিল অর্থনৈতিক মহামন্দার সময়৷
এ ভয় যুক্তিকে নিশ্চল করে দেয়, কল্পনাশক্তিকে অচল করে ফেলে, সেলফ রিলায়েন্সকে হত্যা করে, নিভিয়ে ফেলে উৎসাহ, উদ্যমকে নিরুৎসাহিত করে, উদ্দেশ্যে নিয়ে আসে অনিশ্চয়তা, কাজে ঢিলেমিতে উৎসাহ দেয় এবং আত্ম নিয়ন্ত্রণকে অসম্ভব করে তােলে৷ এটি একজন মানুষের ব্যক্তিত্বের চার্ম টেনে নেয়, সঠিক চিন্তা করার সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে, ব্যাহত করে মনােযােগ, ধৈর্যের ওপর খােদকারী করে, ইচ্ছাশক্তিকে পরিণত করে শূন্যতায়, শেষ করে দেয় উচ্চাকাঙ্খা, ধূসর করে তােলে স্মৃতি এবং নানান চেহারায় হাজির হয়ে ব্যর্থতার আমন্ত্রণ জানায়৷
এটি ভালােবাসাকে হত্যা করে, অন্তরের সুকোমল আবেগগুলাে নষ্ট করে দেয়, বন্ধুত্ব করতে বাধা দেয়, শত চেহারায় ডেকে নিয়ে আসে বিপর্যয়, নষ্ট করে নিদ্রা, টেনে নিয়ে যায় অশান্তি এবং অসুখের দিকে৷ নি : সন্দেহে দারিদ্রের ভয় ভয়ের ছয়টি বেসিকের মধ্যে সর্বাপেক্ষা ধ্বংসাত্মক৷ এটি তালিকার সবার ওপরে রয়েছে কারণ একে নিয়ন্ত্রণ করা সবচেয়ে কঠিন, এ ভয়ের উৎপত্তি খুঁজে বের করতে সেরকম সাহসের প্রয়ােজন৷ এবং এ সত্যকে মেনে নেয়ার জন্য আরাে বেশি সাহস দরকার৷
দারিদ্র্যের ভয় গড়ে ওঠে যখন মানুষ তার পড়শীর অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার দিকে নজর দেয়, তখন ইন্সটিংক্ট দ্বারা সকলেই পরিচালিত তবে জন্তু - জানােয়ারদের চিন্তা - ভাবনা করার ক্ষমতা সীমিত, তারা শারীরিকভাবে এতে অন্যের ওপর হামলা চালায়৷ কিন্তু ইনটুইশন দ্বারা চালিত, চিন্তা ও যুক্তি দিয়ে বিচার করতে সক্ষম মানুষ তার পড়শীকে শারীরিকভাবে ভক্ষণ না করলেও তার ধনসম্পদের ওপর, লােভ করে মানসিকভাবে তাকে ভক্ষণ করে৷ মানুষ সম্পদ অর্জনে এতটাই ব্যাকুল যে সে ছলে বলে কৌশলে তা পেতে চায়৷
আর অনেকসময়ই তার ভেতরে কোন যুক্তি কাজ করে না, কারণ তখন সে দারিদ্র্যের ভয় দ্বারা চালিত৷ বেশিরভাগ মানুষকে যদি প্রশ্ন করেন সে কীসে ভয় পায়, বলবে আমি কিছুই ভয় পাই না৷ এটি সঠিক জবাব নয় কারুণ খুব কম মানুষই বুঝতে পারে সে ভয়ের কাছে জিম্মি৷
এ ভয় এত সূক্ষ এবং গভীরভাবে তার ভেতরে আসন গেড়ে রয়েছে যে মানুষ তার উপস্থিতি টের না পেয়ে সারাজীবন একে বয়ে নিয়ে বেড়ায়৷ শুধুমাত্র সাহসী বিশ্লেষণের মাধ্যমেই এই সর্বজনীন শত্রুর উপস্থিতি ফাস করে দেয়া সম্ভব৷ যখন আপনি এরকম কোনাে বিশ্লেষণ করবেন, আপনার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে তা গভীরভাবে অসুসন্ধান করুন৷ এখানে ভয়ের কিছু লক্ষণের কথা বলা হলাে যাতে আপনার চোখ বুলানাে উচিত৷
আরো পড়ুনঃ- যেকোনো ভয় দূর করার উপায়
দারিদ্র্যের ভয়ের লক্ষণসমূহ
১. ঔদাসীন্য বা অনীহা: উচ্চাকাঙ্ক্ষার অভাবের মাধ্যমে এ জিনিসটির প্রকাশ ঘটে৷ ঔদাসীন্যের কারণে লােকে দারিদ্র সহ্য করে, জীবনে যা আছে তাকেই মেনে নেয় কোনােরকম প্রতিবাদ ছাড়াই৷ সে মানসিক এবং শারীরিকভাবে অলস হয়, তার ভেতরে উদ্যমের অভাব থাকে কল্পনা, উৎসাহ, আত্মনিয়ন্ত্রণ সবকিছুরই অভাব পরিলক্ষিত হয়৷ সেই সাথে সে সিদ্ধান্তহীনতায়ও ভােগে৷
২. সন্দেহ: সন্দেহবাদীরা যে কোনাে ব্যর্থতার জন্য নানান ছুতো দেয় এবং যারা সফল হয় মাঝে মাঝে তাদেরকে ঈর্ষা এবং সমালােচনা করে৷
৩. দুশ্চিন্তাঃ অন্যদের সঙ্গে কাজ করার সময় দুশ্চিন্তাবাদীরা নানান দোষ খুঁজে বেড়ায়, অপরের অর্থ তারা খরচ করে, পার্সোনাল অ্যাপিয়ারেন্সকে অগ্রাহ্য করে, সারাক্ষণ খিটমিট করে, বদমেজাজী হয়, এরা সারাক্ষণ মদ নিয়ে পড়ে থাকে, কখনাে বা মাদকও গ্রহণ করে৷ এরা থাকে নার্ভাস, আত্ম- সচেতনতা এবং ভারসাম্যের অভাব থাকে তাদের, সেলফ - রিলায়েন্সও৷
৪. অতিমাত্রায় সতর্কতাঃ যেকোন ঘটনা শুধু নেতিবাচক দিকগুলােই এদের চোখে পড়ে, সাফল্যের বদলে সম্ভাব্য ব্যার্থতা নিয়েই সারাক্ষণ মেতে থাকে আলােচনায়৷ বিপর্যয়ের সবগুলাে রাস্তাই তাদের চেনা অথচ ব্যর্থতা এড়ানাের জন্য কখনাে পরিকল্পনা করে না৷ কখন সঠিক সময় আসবে সেই আশায় বসে থেকে ভেরেণ্ডা ভাজে৷ আর অপেক্ষা করা তাদের জন্মের অভ্যাসে পরিণত হয়৷ তারা শুধু মনে রাখে কারা ব্যর্থ হলাে তাদের কথা, অথচ সফল মানুষদের কথা ভুলে যায়৷ ডােনাটের ছিদ্রটাই দেখে, পুরাে ডােনাট তাদের চোখে পড়ে না৷ এই হতাশাবাদীরা অতিমাত্রায় সতর্ক থাকতে থাকতে দুশ্চিন্তার চোটে বদহজম বাঁধিয়ে ফেলে৷
৫. কাজে গড়িমসি: এরা সবসময় আজকের কাজ কালকের জন্য ফেলে রাখে৷ যে কাজটি গত বছরই করা সম্ভব ছিল সেটি আগামী বছর শেষ করবে বলে ফেলে রাখে৷ যে কোনাে কাজ শেষ করার জন্য অ্যালিবাই এবং খোঁড়া যুক্তি খোঁজার পেছনে প্রচুর সময় নষ্ট করে৷ এ অভ্যাস দুশ্চিন্তা ও অতি মাত্রায় সতর্কতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত৷ লড়াই করার বদলে কপ্রােমাইজ করে৷ সমস্যা এলে তারা সঙ্গে কম্প্রােমাইজ করে৷ উপরােল্লিখিত অভ্যাসগুলাের যারা পরিবর্তন করতে জানে না দারিদ্র্য কখনাে তাদের পিছু ছাড়ে না৷ দারিদ্রের ভয়কে জয় করতে হলে এই অভ্যাসগুলাের পরিবর্তন ছাড়া বিকল্প কোনাে উপায় নেই৷
আরো পড়ুনঃ- টেলিপ্যাথি | অলোকদৃষ্টি বা অসাধারণ অত্নদৃস্টি
সমালােচনার ভয়
এ ভয়টি মানুষের মধ্যে কীভাবে গেড়ে বসে কেউ বলতে পারে না তবে একটি বিষয় নিশ্চিত যে এ ভয়টি তার মনে প্রবলভাবে কাজ করে৷ অনেকের ধারণা রাজনীতি যখন পেশা হয়ে উঠল তখন থেকে এ ভয়টির সৃষ্টি৷ আবার অনেকে মনে করেন মহিলারা যখন নিজেদের স্টাইল সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠতে শুরু করে, ওই সময় থেকে তারা সমালােচিত হওয়ার ভয়ে ভীত থাকতে শুরু করে৷ সমালােচনার ভয় বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, বেশিরভাগই ছােটখাট, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঘটে৷ টেকো মানুষরা ভয়ে থাকে লােকে তাদের টেকো বলে সমালােচনা করবে৷ সমালােচনার ভয় করে না এমন মানুষ বিরল৷
তবে বেশিরভাগই এটি স্বীকার করতে চায় না৷ অনেকে উপকথায় বিশ্বাস করে কিন্তু তা স্বীকার করে না৷ কারণ যদি পাছে লােকে কিছু বলে৷ অনেকে ভূতে বিশ্বাস করলেও তা স্বীকার যায় না৷ তা - ও ওই সমালােচনার ভয়েই৷ সমালােচনার ভয় একজন মানুষের উদ্যম নষ্ট করে ধ্বংস করে তার কল্পনাশক্তি, তার ব্যক্তি স্বাতন্ত্র, কেড়ে নেয়৷ এবং আরাে শতাধিক উপায়ে তার ক্ষতি করে৷ বাবা - মা সন্তানদের ক্রমাগত সমালােচনা করে অনেক ক্ষতি করেন৷
বাবা - মা অপ্রয়ােজনীয় সমালােচনা করে সন্তানের মধ্যে হীনমন্যতা তৈরি করেন৷ চাকরিদাতারা, যারা মানব প্রকৃতি ভালাে বুঝতে পারেন, তাদের লােকজনের কাছ থেকে সেরা জিনিসটা আদায় করে নেন সমালােচনা করে নয়, গঠনমূলক পরামর্শ দিয়ে৷ বাবা - মা তাদের সন্তানদের কাছ থেকে একই রকমের ফলাফল পেতে পারেন৷ সমালােচনা মানুষের মনে ভয় প্রােথিত করবে অথবা আফসােস এটি ভালােবাসা কিংবা স্নেহ সৃষ্টিতে ব্যর্থ৷
সমালোচনার ভয়ের লক্ষ্মণসমূহ
সচেতনতা: অচেনা লােকদের সঙ্গে কথা বলার সময় সমালােচনার ভয়ে ভীত মানুষজন নার্ভাস হয়ে থাকে, অদ্ভুত ভঙ্গিতে হাত পা নাড়ে, চোখ নাড়াচড়া করে৷
ভারসাম্যতার অভাব: কথা বলার সময় গলা কাপে, এদের স্মৃতি শক্তি দুর্বল থাকে৷ ব্যক্তিত্ব সমালােচনার ভয়ে ভীত লােক সুদৃঢ়ভাবে কোন্দেসিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে না, তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত কোনাে চার্ম বা আর্কষন থাকে না, যে কোনাে বিষয় মুখােমুখি হওয়ার চেয়ে ওগুলাে পাশ কাটিয়ে যেতে চায়৷ অন্যদের মতামত ভালাে করে না শুনেই তাদের সঙ্গে একমত পোষন করে৷ হীনমন্যতা বড় বড় বুলি কপচিয়ে অন্যদেরকে মুগ্ধ করার ব্যর্থ চেষ্টা করে অনেক সময় এরা জানেই না যে এরা কী বলছে৷ অন্যদের পােশাক, কথা বলার ঢঙ, আচার - আচরণ ইত্যাদি নকল করে৷ কাল্পনিক অর্জন নিয়ে গর্ব করে৷ এভাবে মাঝে মাঝে তারা ওপরে ওপরে একটু সুপরিওরিটি ভাব দেখায়৷
অপচয়: সমালােচনার ভয়ে ভীত মানুষ অসংযমী এবং অপচয়কারী হয়ে থাকে৷
উদ্যমের অভাবঃ এরা সুযােগ পেলেও তা হারায়, নিজেদের মতামত ব্যক্ত করতে কুণ্ঠাবােধ করে, নিজের আইডিয়ার বিষয়ে কোনাে আত্মবিশ্বাসই থাকে না, সুপিরিয়র কোনাে প্রশ্ন করলে তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা থাকে, তাদের আচার আচরণ এবং কথা বলায় সর্বদাই আড়ষ্ট ভাব লক্ষ্যণীয়, কাজে - কর্মে কোনাে মিল নেই এবং শঠতা ও প্রবঞ্চনার আশ্রয় নেয়৷
উচ্চাকাক্ষার অভাবঃ সমালােচনার ভয়ে ভীতদের থাকে মানসিক এবং শারীরিক আলস্য, থাকে স্বাধিকারের অভাব, সিদ্ধান্ত গ্রহণে ধীরগতিসম্পন্ন, সহজেই অপরের দ্বারা প্রভাবিত, অন্যদের পেছনে সমালােচনা করে কিন্তু সামনাসামনি হলে তােষামােদ করে, কোনােরকম প্রতিবাদ বা আপত্তি ছাড়াই মেনে নেয় পরাজয়, কেউ বিরােধিতা করলে উদযােগ থেকে সরে যায়, কোনাে কারণ ছাড়াই অন্যদেরকে সন্দেহের চোখে দেখে, কৌশলীভাবে কথা বলতে জানে, সেভাবে চলাফেরাও করতে পারে না এবং ভুল হলে তার দোষও স্বীকারও করে না৷
আরো পড়ুনঃ- Valentine day এর আসল রহস্য কী
রুগ্ন বা ভগ্ন স্বাস্থ্যের ভয়
এ ভয়টি হতে পারে শারীরিক কিংবা বংশগত৷ এটি বুড়িয়ে যাওয়া এবং মৃত্যু ভয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত৷ মানুষ রুগ্ন বা ভগ্ন স্বাস্থ্য নিয়ে ভীত কারণ তার মনের মধ্যে মৃত্যুভয়ের কিছু ভয়ংকর চিত্র ঢুকিয়ে দেয়া হয়৷ ভগ্ন স্বাস্থ্যের জন্য তার যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে পারে সে বিষয়টি ভেবেও ভীত হয় লােকে৷ একজন প্রখ্যাত চিকিৎসক বলেছেন যারা ডাক্তারের কাছে পেশাদারী সেবা পেতে যায় তাদের মধ্যে শতকরা ৭৫ ভাগই হাইপােকন্ড্রিয়া বা কাল্পনিক অসুস্থতায় ভুগছে৷
এরকম দেখা গেছে যে অসুখের ভয়, যদিও এ নিয়ে ভয় পাবার যেখানে বিন্দুমাত্র কারণই নেই, প্রায়ই এ ভীতি যে অসুখ নিয়ে একজন শঙ্কিত, সেটাই তার শরীরে বাসা বাঁধে৷ মানুষের মন খুব শক্তিশালী৷ এটি ধ্বংস করতে পারে আবার সৃষ্টিও করতে জানে৷ রুগ্ন স্বাস্থ্যের ভয় নিয়ে মনের দুর্বলতা মানুষের অনেক ক্ষতি করতে পারে৷ ডাক্তাররা রােগীদেরকে তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ‘হাওয়া বদল করতে যেতে বলেন কারণ মানসিক অবস্থার পরিবর্তনটি জরুরি৷ রুগ্ন বা স্বাস্থ্যের ভীতি প্রতিটি মানুষের মনেই বাস করে৷
দুশ্চিন্তা, ভয়, ব্যবসা এবং প্রেমে হতাশা ইত্যাদি এই ভয়ের বীজটিকে অঙ্কুরিত করে বৃদ্ধি করে৷ রুগ্ন স্বাস্থ্যের ভয়ের কারণের তালিকায় শীর্ষে রাখা যেতে পারে ব্যবসা ও প্রেমে হতাশার বিষয়টি৷ প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এক তরুণকে শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে যেতে হয়েছে৷ সে কয়েকমাস জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিল৷ সাজেস্টিভ থেরাপিউটিক্সের একজন বিশেষজ্ঞকে ডাকতে হয়েছে তার জন্য৷
স্পেশালিস্ট বদলে সেখানে অপূর্ব সুন্দরী এক তরুণীকে নিয়ােগ দেয়া হয় যে ( ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ) প্রথম দিনেই তরুণের সঙ্গে ভালােবাসাবাসি করার জন্য৷ তিন সপ্তাহ পরে তরুণ হাসপাতাল থেকে মুক্তি পায়, তখনও সে অসুস্থ তবে সম্পূর্ণ আলাদা একজন মানুষ৷ সে আবার প্রেমে পড়েছে৷ তার জন্য যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল তার পুরােটাই ভুয়া হলেও রােগী এবং নার্স কিছুদিন পরে পরস্পরের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়৷
রুগ্ন বা ভগ্ন স্বাস্থ্যের লক্ষণসমূহ
অটো - সাজেশন: সেলফ - সাজেশনের নেতিবাচক ব্যবহার দ্বারা সব ধরনের রােগের লক্ষণ এরা খুঁজে বেড়ায়৷ কাল্পনিক রােগ উপভােগ করে এবং এমনভাবে কথা বলে যেন এগুলাে সব বাস্তব৷ অন্যদের সঙ্গে সবসময় অপারেশন, দুর্ঘটনা এবং অসুখের অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বলতে থাকে৷ এ ভয়ের লক্ষণের মধ্যে আরাে আছে ডায়েট করা, প্রফেশনাল গাইড ছাড়াই শারীরিক অনুশীলন৷ ঘরে বসে চিকিৎসা, হাতুড়ে চিকিৎসার চেষ্টা ইত্যাদি৷
আরো পড়ুনঃ- অশান্তিতে ভুগলে যেসব রোগ হয়
হাইপােকনড্রিয়াঃ অসুখ নিয়ে কথা বলার অভ্যাস, রােগ শােকের ওপর কেন্দ্রীভূত মনোেযােগ, রােগে আক্রান্ত হওয়ার ভয় করতে করতে শেষ পর্যন্ত নার্ভাস ব্রেকডাউনের শিকার হয়ে যায়৷ এ অবস্থার চিকিৎসা বোতলের ঔষধ দ্বারা সম্ভব নয়৷ শুধু নেতিবাচক চিন্তার কারণেই এ সমস্যার উদ্ভব এবং ইতিবাচক চিন্তা ছাড়া এ থেকে পরিত্রাণের উপায় নেই৷ হাইপােকনড্রিয়া ( কাল্পনিক রােগের একটি মেডিকেল টার্ম ) একজন মানুষের ততােটাই ক্ষতি করতে পারে যতটা ক্ষতি করে কোনাে অসুখের ভয়৷ বেশিরভাগ নার্ভজনিত রােগের উদ্ভব হয় এই কাল্পনিক অসুখ থেকে৷
অনুশীলনঃ রুগ্ন স্বাস্থ্যের ভয় প্রয়ােজনীয় শারীরিক অনুশীলনকে ব্যাহত করে৷ লােকে বাইরে যেতে ভয় পায়, ভাবে রাস্তাঘাটে ওঁৎ পেতে থাকা জীবাণুর দল হামলে পড়বে৷ ফলে বাড়িতে বসে বসে তারা ফুলতে থাকে, ওভার ওয়েটের সমস্যায় আক্রান্ত হয়৷
সংবেদনশীলতাঃ ভগ্ন স্বাস্থ্য ভীতি প্রাকৃতিক শারীরিক প্রতিরােধ ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয় এবং এমন অনুকূল একটি পরিবেশের সৃষ্টি করে যাতে যে কোনাে রােগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে৷ রুগ্ন স্বাস্থ্য ভীতি প্রায়ই দারিদ্র ভীতির সঙ্গে সংযুক্ত থাকে, বিশেষ করে হাইপোেকনড্রিয়াজের ক্ষেত্রে, যারা সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকে কীভাবে ডাক্তার এবং হাসপাতালের বিল মিটাবে সেই চিন্তা নিয়ে৷ এ ধরনের মানুষজন বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে দেয় অসুস্থতার জন্য প্রস্তুতি নিতে, মৃত্যু নিয়ে কথা বলে, কবরের জন্য জমি কেনার চিন্তা ইত্যাদিতে৷
প্রশ্রয় দেয়াঃ ভগ্ন স্বাস্থ্যের ভয়ে ভীত মানুষের অভ্যাস হলাে কাল্পনিক অসুখের কথা বলে লােকের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করে৷ আলস্য ঢাকা দিতে অসুখের ভান করা কিংবা এটিকে অ্যালিবাই হিসেবে ব্যবহার করা এক ধরনের উচ্চাকাঙক্ষারই অভাব৷
পানাসক্তি: মাথা ব্যথা, স্নায়ুশুল ইত্যাদি রােগের ব্যথা উপশমে অ্যালকোহল কিংবা নারকোটিক্স ব্যবহার ভগ্ন স্বাস্থ্য ভীতিরই লক্ষণ৷
প্রেম - ভালােবাসা হারানাের ভয়
ঈর্ষা কিংবা ডিমনেশিয়ার অন্যান্য ফর্ম থেকে সৃষ্টি হয় মানুষের মাঝে কারাে প্রেম ভালােবাসা হারানাের ভয়৷ ছয়টি মূল ভয়ের মাঝে এটি সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক৷ অন্যান্য বেসিক ভয়ের চেয়ে এটিই সম্ভবত: শরীর এবং মনের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি সাধন করে৷ কারণ এ থেকে একজন মানুষ স্থায়ীভাবে উন্মাদ হয়ে যেতে পারে৷ প্রেম - ভালােবাসা হারানাের ভীতি সম্ভবত সেই প্রস্তর যুগ থেকে চলে আসছে৷ যখন লােকে জোর করে নারী হরণ করত৷ তারা মেয়েদেরকে এখনাে হরণ করে তবে কৌশলটি বদলে গেছে৷
গায়ের জোরের বদলে বর্তমানে তারা মেয়েদের পিছু লেগে থাকে, তাদেরকে সুন্দর সুন্দর জামা - কাপড়, মােটর গাড়িসহ আরাে নানান কিছু দেয়ার লােভ দেখায় যা শারীরিক শক্তি প্রয়ােগের চেয়ে অনেক বেশি ফলপ্রসূ ভূমিকা পালন করে৷ সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকেই মানুষের অভ্যাস একইরকম, কেবল নিজেকে উপস্থাপনের ঢঙটা বদলেছে স্যত্ব বিশ্লেষণ এটাই দেখিয়েছে যে পুরুষদের চেয়ে নারীরাই এই ভয়ে বেশি কাবু হয়ে থাকে৷ এর সহজ ব্যাখ্যাও আছে৷ মহিলারা অভিজ্ঞতা থেকে জানে পুরুষরা প্রকৃতিগতভাবেই বহুগামী এবং প্রতিদ্বন্দ্বীর হাতে তাদেরকে তুলে দিয়ে বিশ্বাস করা যায় না৷
আরো পড়ুনঃ- অবসাদ ও ক্লান্তি দূর করার উপায়
ভালােবাসা হারানাের ভয়ের লক্ষণ
ঈর্ষাঃ জোরালাে বা যথেষ্ট প্রমাণ ছাড়াই বন্ধু - বান্ধব কিংবা প্রিয় মানুষকে সন্দেহ করার অভ্যাস৷ ( ঈর্ষা হলাে dementia praecox- এর একটি আকার, যেটি মাঝে মাঝে অতি সামান্য কারণেই অতি ভয়ংকর চেহারা ধারণ করতে পারে ) স্ত্রী বা স্বামীকে কোনাে প্রমাণ ছাড়াই ব্যভিচারের সন্দেহ৷ সবাইকে সন্দেহ করা এবং কাউকেই একদম বিশ্বাস না করা৷
দোষ খুঁজে বেড়ানােঃ বন্ধু, আত্মীয় - স্বজন, ব্যবসায়ী সহযােগী এবং প্রিয়জনের সামান্যতম উস্কানিতেই দোষ খুঁজে বেড়ানাে, অনেক সময় কোনাে কারণ ছাড়াই এরকমটি ঘটে৷
জুয়াঃ প্রেমিকার জন্য জুয়া, চৌর্যবৃত্তি, প্রতারণা এবং অন্যান্য কুকর্মের সাহায্যে অর্থ জোগাড় করা এ বিশ্বাস নিয়ে যে এ দিয়ে ভালােবাসা কেনা যায়৷ যখন কেউ তার প্রিয়জনের জন্য যথেষ্ট ব্যয় করে এবং ঋণ করে তাকে উপহার কিনে দিতে, বুঝতে হবে প্রিয়জনকে হারানাের ভয় তার ভেতরে কাজ করছে৷ এ ভয়ে ভীতদের মধ্যে থাকে দ্রিাহীনতা, নার্ভাসনেস, ধৈর্যের অভাব, দুর্বল ইচ্ছশক্তি, নিজেকে নিয়ন্ত্রণের অভাব, আত্মনির্ভরশীলতার অভাব এবং বদ মেজাজ৷
বুড়িয়ে যাওয়ার ভয়
মানসিক পরিপক্কতার বয়সে হীনমন্যতায় ভুগতে থাকা এবং চল্লিশ বছর বয়সে ভাবতে থাকা যে বয়সের কারণে যে কোনাে সময় অক্কা যেতে পারে৷ ( অথচ বয়স হলাে চল্লিশ থেকে ষাট )৷ চল্লিশ বা পঞ্চাশ বছরে পৌছালে বুড়ো হয়ে গেছি এ ধরনের কথা বারবার বলতে থাকা অথচ এ বয়সটাই হলাে জ্ঞান এবং স্বচ্ছ চিন্তা শক্তির বয়স৷
উদ্যম, কল্পনা করার অভ্যাস এগুলােকে বিদায় জানানাে এই ধুয়াে তুলে সে বুড়িয়ে গেছে বলে এই গুণগুলাে আর চর্চা করার সময় নেই৷ চল্লিশ বছর বয়সীরা যখন নিজেদেরকে আরাে বেশি তরুণ দেখাতে তরুণদের মতাে পােশাক পরে এবং তরুণদের মতাে আচার - আচরণ করতে থাকে তখন তাদেরকে বন্ধুবান্ধব এবং অচেনা মানুষজন হাসিঠাট্টা করতে থাকলে তারা ভাবে যে তারা বুড়িয়ে গেছে৷
মৃত্যু ভয়
সকল বেসিক ভয়ের মধ্যে নিষ্ঠুরতম ভয় হলাে এটি৷ কারণটি স্পষ্ট৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মৃত্যু ভয় মানুষকে তাড়া করে ফেলে ধর্মীয় উন্মাদনার কারণে৷ তথাকথিত ‘বিধর্মীরা সুসভ্যদের চেয়ে কম মৃত্যু চিন্তায় ভােগে৷ কোটি কোটি মানুষ এখনও অব্যাখ্যাত প্রশ্নগুলাের জবাব খুঁজে বেড়াচ্ছে কোথা থেকে এবং কোথায়৷ আমি কোথা থেকে এসেছি এবং আমি কোথায় যাব? অনেক মানুষই মৃত্যুর পরে অনন্তকাল নরকবাসের কথা ভেবে ভীত হয়৷ তারা মৃত্যু ভয়ে এতটাই ভীত থাকে যে সমস্ত যুক্তি হারিয়ে ফেলে৷
এ ভয় জীবনের প্রতি তার আগ্রহ ধ্বংস করে দেয় এবং তার জন্য সুখী হয়ে ওঠা অসম্ভব হয়ে পড়ে৷ গােটা পৃথিবী গড়ে উঠেছে দুটি জিনিসের ওপর ভিত্তি করে এনার্জি এবং ম্যাটার৷ পদার্থ বিজ্ঞানের প্রাথমিক পাঠে আমরা পড়েছি ম্যাটার কিংবা এনার্জি সৃষ্টি করা যায় না, ধ্বংস করাও যায় না৷ ম্যাটার এবং এনার্জির রূপান্তর ঘটানাে সম্ভব কিন্তু ধ্বংস করা সম্ভব নয়৷ জীবন হলাে এনার্জি বা শক্তি৷
যদি এনার্জি কিংবা ম্যাটার ধ্বংস করা না যায় তাহলে জীবনও ধ্বংস করা যাবে না৷ জীবন, শক্তির অন্যান্য গঠনের মতাে৷ ট্রানজিশনের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত কিংবা বদল ঘটানাে সম্ভব, ধ্বংস করা সম্ভব নয়৷ মৃত্যু আসলে একটি ট্রানজিশন বা ক্রান্তিকাল মাত্র৷ মৃত্যু যদি পরিবর্তন কিংবা ট্রানজিশন করা না যায় তাহলে মৃত্যুর পরে দীর্ঘ অনন্ত, ক্লান্তিময় একটি নিদ্রা ছাড়া আর কিছুই থাকে না৷ আর নিদ্রাকে ভয় পাবার কিছু নেই৷ এভাবেই আপনি মৃত্যু ভয়কে চিরতরে মন থেকে মুছে দিতে পারেন৷
আরো পড়ুনঃ- মানুষ আত্মহত্যা কেন করে | বাঁচার জন্য আত্মহত্যা
মৃত্যু ভয়ের লক্ষণ:
জীবন থেকে কিছু প্রাপ্তির বদলে সারাক্ষণই মরণের কথা চিন্তা করা৷ এটি ঘটে উদ্দেশের অভাব কিংবা ভালাে কোনাে পেশায় নিয়ােজিত থাকতে না পারলে৷ এ ভয়টি বয়সীদের মধ্যেই বেশিরভাগ কাজ করলেও তরুণরাও এর শিকার হয়৷ মৃত্যুভয় তাড়ানাের শ্রেষ্ঠতম উপায় হলাে কিছু অর্জনের জন্য অদম্য আকাক্ষা৷ একজন ব্যস্ত মানুষ খুব কমই মৃত্যু চিন্তা করে৷ সে জীবনের রােমাঞ্চকর দিকগুলাে দেখে বলে মৃত্যুকে নিয়ে তার দুশ্চিন্তা করতে হয় না৷
দারিদ্রের ভয়ের সঙ্গে মাঝে মাঝে মৃত্যু ভয়ও জেঁকে বসে মনে৷ দারিদ্রের কারণে প্রিয়জনের মৃত্যু হতে পারে এরকম ভয়ই আসলে কাজ করে মনে৷ আবার কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যুভয় চলে আসে অসুস্থতা এবং শারীরিক প্রতিরােধক ক্ষমতা ক্রমে কমে এলে৷ মৃত্যুভয়ের খুব সাধারণ কারণগুলাের মধ্যে রয়েছে রুগ্ন স্বাস্থ্য, দারিদ্র্য, উপযুক্ত পেশা না পাওয়া, ভালােবাসার বদলে হতাশা, উন্মাদনা, ধর্মীয় ইত্যাদি৷
Thanks to comment Jibon Somossa official blog. Stay with us for more content. Follow us to Facebook. www.facebook.com/jibonsomossa.blog